পরিতোষ কুমার বৈদ্য: আজ আন্তর্জাতিক খাদ্য দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানান আয়োজনে দিবসটি পালন করছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্টান বারসিক’র সহায়তায় এবং উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ‘খাদ্যের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে দাও শীর্ষক নিরাপদ খাদ্যের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্টিত হয়েছে। এ সময়ে উপকুলীয় জনগোষ্টীরা বিষমুক্ত খাদ্য চাই, সকল প্রাণীর জন্য নিরাপদ খাদ্য চাই, খাদ্যই কথা খাদ্যই পুষ্টি, খাদ্যমান জীবন বাঁচায় প্রভৃতি স্লোগান দেন। অবস্থান কর্মসূচিতে খাদ্যের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে দাও শীর্ষক নিরাপদ খাদ্যের দাবি তুলে বক্তব্য রাখেন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ গাজি, জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সদস্য অল্পনা রানী মিস্ত্রি, কৌশল্যা মুন্ডা।
বক্তারা বলেন, মৌলিক অধিকার হিসেবে খাদ্য পেলেও এই খাবার কতটা স্বাস্থ্যকর। আমরা খাদ্য খেয়ে জীবন বাঁচাতে হয় তাই খাদ্য গ্রহণ করছি কিন্তু এই খাদ্যের পুষ্টিমান কোথায়? কিছু অসাধু ব্যবসায়ী যেমন বেশী লাভের আশায় প্রতিনিয়ত খাদ্য দ্রব্যে ভেজাল মিশিয়ে থাকে তেমনি বেশী ফলনের জন্য কৃষকেরা রাসায়নিক সার অধিক হারে ব্যবহার করে থাকে। ফল বিক্রেতারা দীর্ঘদিন ফল সুরক্ষিত রাখতে ফলে ফরমালিন মিশিয়ে বাজারজাতকরণ করে থাকে এবং সবজি দোকানসহ হোটেলে ও একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়। এমনকি পানীয় জল নিয়ে চলছে চরম ব্যবসা। পানীয় জল এখন জনসাধারণের প্রাপ্য নয় পণ্যে পরিনত হয়েছে। ভেজাল মিশ্রিত খাবার গ্রহণের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং প্রতি বছর প্রাণহানিকর ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিবছর দেশে প্রায় ৩ লক্ষ লোক ক্যান্সার, কিডনি এবং লিভার সিরোসিস রোগে মৃত্যুবরণ করে এবং ৩ লক্ষাধিক লোক ক্যান্সার, কিডনি , লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অর্থের অভাবে এসব রোগে আক্রান্ত রোগীরা যেমনি ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়, তেমনি তার পরিবার চিকিৎসার ব্যয় বহন করে নি:স্ব হয়ে পড়ে। এমনকি শিশুদের খাদ্যেও ভেজাল মেশাতে কুন্ঠাবোধ করে না বিভিন্ন শিশু খাদ্য দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।বক্তারা আরও বলেন, যেখানে শিশু খাদ্যের নিরাপত্তা নেই, সেখানে বড়দের খাদ্য নিরাপত্তা দিবাস্বপ্ন মাত্র। মৌলিক অধিকার হিসেবে আমরা আমাদের খাদ্যে নিরাপত্তা চাই। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নীতিনির্ধারক ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানায় খাদ্য নিরাপত্তা ও ভেজালমুক্ত খাদ্যের জন্য নির্ধারিত আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হোক। এজন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হোক।