বাগেরহাট সরকারি টেকনিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষসহ ৪৫ পদ খালি

বাগেরহাট সরকারি টেকনিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষসহ ৪৫ পদ খালি

খুলনার সময়: বাগেরহাট সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে একজন অধ্যক্ষ, ট্রেড কোর্সের আট জন প্রধান প্রশিক্ষক, সাত জন প্রশিক্ষক, ১৪ জন জুনিয়র প্রশিক্ষক, আট জন ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর, চার জন ল্যাব সহকারী এবং সাধারণ বিষয়ের জন্য ১৬ জন শিক্ষকসহ মোট ৬৮টি পদের মধ্যে অধ্যক্ষসহ ৪৫টি পদই খালি। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। শিক্ষক-প্রশিক্ষকের অভাবে দুই শিফটের বদলে এক শিফটে ক্লাস চালাতে বাধ্য হচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।  বন্ধ হয়ে গেছে ডিপ্লোমা শিক্ষা কার্যক্রম। কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ ও আবাসন সংকট মেটাতে একটি পাঁচ তলা ভবনের নির্মাণকাজ চলমান আছে। আর শিক্ষক নিয়োগসহ অন্য সমস্যাগুলোর ব্যাপারেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, কলেজের পক্ষ থেকে শূন্য পদে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের কোনো আবেদনই করা হয়নি।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে ৩ দশমিক ৫০ একর জমির ওপর ‘ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ভিটিআই)’ নামে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখানে ১৯৯৫ সালে এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং ১৯৯৭ সালে এইচএসসি (ভোকেশনাল) পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় ‘বাগেরহাট সরকারি কারিগরি বিদ্যালয় ও কলেজ’ নামে। তখন থেকে এসএসসি এবং এইচএসসির (ভোকেশনাল) চারটি ট্রেডে শিক্ষার্থীদের যে বিষয়গুলো পড়ানো হয় সেগুলো হলো—কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং, ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে চার বছরের ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু হয়, যা ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ আছে।

এই মুহূর্তে কলেজটিতে অধ্যক্ষসহ ৪৫টি শূন্য পদের মধ্যে আছে—ছয় জন চিফ ইনস্ট্রাক্টর, পাঁচজন ইনস্ট্রাক্টর, ১১ জন জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর, ছয় জন ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর, তিন জন ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ও নয় জন শিক্ষকের পদ । এছাড়া উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, উচ্চমান সহকারী কাম স্টোর কিপার ও দুই জন অফিস সহকারীর পদও শূন্য আছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, এখানকার সাত শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের জন্য কোনো ক্যান্টিন নেই। বড় একটি খেলার মাঠ থাকলেও বছরের চার মাস মাঠ সেটি জলাবদ্ধ থাকে। একসময় এখানে ছাত্রদের জন্য একটি হোস্টেল থাকলেও বর্তমানে সেখানে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই।

কলেজের ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডের দশম শ্রেণির ছাত্র শাফায়েত হোসেন জানান, ‘সামান্য বৃষ্টিতেই খেলার মাঠে পানি জমে যায়। আমরা খেলতে পারি না। খাবারের জন্য কলেজের ভেতর কোনো ক্যান্টিন নেই। কলেজের একজন কর্মচারী নিজ উদ্যোগে কিছু ফাস্ট ফুড বিক্রির ব্যবস্থা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।’

সার্বিক বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. বাদশা মিয়া বলেন, ‘নির্মাণাধীন পাঁচ তলা অ্যাকাডেমিক ভবনের কাজ শেষ হলে শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব সংকট দূর হবে। এছাড়া শিক্ষক সংকট ও মাঠের সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ডিপ্লোমা কোর্সটি বন্ধ করা হয়েছে তাদের নির্দেশেই।’

বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম সাইদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাগেরহাট সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ কিংবা চাহিদার কোনো তথ্যই জমা দেয়নি। এ বিষয়ে আমরা অবগত না।’

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

খুলনার সময়

একটি সৃজনশীল সংবাদপত্র

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার ,ভোর ৫:২৫
  • ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন