ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস অবলম্বনে সরকারি অনুদানে নির্মিত সিনেমা ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’। সিনেমাটিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ও চিত্রনায়ক গাজী আবদু নূর।
আবদুস সামাদ খোকন পরিচালিত সিনেমাটি দেশজুড়ে ২৩টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। মুক্তির দিন থেকে দর্শক টানতে ব্যর্থ হচ্ছে সিনেমাটি। কোনো শোয়ে ২ জন, কোনো শোয়ে ৩ জন করে দর্শক আসছেন। আবার কোনো শোয়ে কেউই আসছেন না। প্রায় প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহের একই চিত্র!
এ অবস্থায় লাভের মুখ তো দূরের কথা শ্যামলী সিনেমা হলের বিদ্যুৎ বিলও উঠছে না সিনেমাটির আয় থেকে। তাই দুই দিন যেতেই সিনেমাটি নামিয়ে নিয়েছে প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানিয়েছেন রাজধানীর শ্যামলী প্রেক্ষাগৃহের হাউজ ম্যানেজার আহসানউল্লাহ। ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ কেমন চলছে জানতে চাইলে আহসানউল্লাহ বলেন, ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ আমাদের এখানে গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত ছিল। কিন্তু আজ রোববার থেকে আমরা শাকিব খানের ‘নবাব এলএলবি’ সিনেমাটি চালাচ্ছি।
কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিনেমার সেল-ই নাই। দর্শক কোনো শোয়ে দুইজন, কোনো শোয়ে তিনজন আবার কোনো শোয়ে একেবারে শূন্য। সারাদিনে দেখা গেছে ১৬/১৭ জন করে দর্শক হচ্ছিল। শুক্রবার নাইট শোয়ে তো একজন এসেছিল। একজন নিয়ে তো আর শো চালানো কি সম্ভব?
বিদ্যুৎ বিল তোলার নিশ্চয়তাও দিতে পারেনি দীঘির ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’—এমনটা উল্লেখ করে আহসানউল্লাহ বলেন, প্রযোজকের সঙ্গে কথা বলেই নামিয়েছি। বলেছি এভাবে চললে হল বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ সিনেমাটি চালিয়ে স্টাফ খরচ না উঠুক, বিদ্যুৎ বিল তো উঠতে হবে। তাও যদি না ওঠে তাহলে কীভাবে হবে। সিনেমাটি দর্শক টানতে ব্যর্থ হওয়ার দুটি কারণ বের করেছেন এ প্রেক্ষাগৃহ ম্যানেজার। তিনি বলেন, মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ও সিনেমার অবস্থা দুটোই খারাপ। আপনি নিজে যদি একটি সিনেমা বানাতে যান তাহলে আগেই চিন্তা করবেন লগ্নিকৃত টাকা তুলে আনতে হবে। তখন কিন্তু সেভাবেই বানাবেন। মন দিয়ে গল্প বাছাই করবেন। যত্নের সঙ্গে সিনেমাটি বানাবেন। কিন্তু অনুদানের সিনেমাগুলো বানানো হয় দায়সারাভাবে। দু-চারটি ব্যতিক্রম ছাড়া আজ পর্যন্ত অনুদানের কোনো সিনেমা ভালো চলতে দেখলাম না।
‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ নামিয়ে শ্যামলী প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ ভরসা করছে শাকিবের পুরনো সিনেমা ‘নবাব এলএলবি’র ওপর। প্রত্যাশার কতখানি পূরণ করছে সিনমোটি জানতে চাইলে আহসানউল্লাহ বলেন, মোটামুটি বলতে পারেন। অত যে ভালো তা না। কেননা এটা তো পুরনো সিনেমা। অনেক আগে মুক্তি পেয়েছে। ভালো মন্দের চেয়ে বড় কথা হচ্ছে প্রেক্ষাগৃহ সচল রাখা আরকি। তাছাড়া আজ মাত্র চালালাম। এখনই বলা যাচ্ছে না কেমন যাবে। সিনেমাটি যে চলছে তা মানুষের জানতেও তো সময় লাগবে। তবে দীঘির সিনেমার চেয়ে ভালো। সিনেমাটি ২০২০-২১ অর্থ বছরে অনুদান পেয়েছে। এই সিনেমাতে দীঘি-নূর ছাড়াও অভিনয় করেছেন বাপ্পা সান্তনু, মুনমুন আহমেদ, সুব্রত বড়ুয়া, মাসুম বাশার, মিলি বাশার, সাদিয়া শিমুল প্রমুখ। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন তামান্না সুলতানা।
©খুলনার সময় ২০২৩ | এই ওয়েবসাইটের সকল লেখা, ছবি, ভিডিও সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত