খুলনায় মৃত্যুর ৭ দিন পর কিশোরী ছোট মেয়ে থানায় এসে বললেন। আমার বাবার মৃত্যু স্ট্রোকে হয়নি। আমি আমার বাবাকে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, পরে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছি। আমাকে গ্রেপ্তার করুন। খুলনার দৌলতপুরে ঘটনাটি শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে ঘটলেও রোববার (১৪ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে জানাজানি হলে খুলনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। নিহত শেখ হুমায়ুন কবির নগরীর দৌলতপুর থানার দেয়ানা উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। থানায় আত্মসমর্পণ করা কিশোরী তার ছোট মেয়ে। চলতি বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। তাকে বর্তমানে কেএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে খুলনা নগরীর উত্তর দেয়ানায় মৃত হুমায়ুন কবীরের বাড়িতে গিয়ে বাড়ির মূল ফটক বন্ধ পাওয়া যায়। মূল ফটকের সামনে স্থানীয় কিছু মানুষ বাড়িতে ঢোকার অপেক্ষা করছে, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ায় বাড়ির গেট খোলেনি তারা। স্থানীয়রা জানায়, তারা কোথায় যেন গিয়েছিলেন এরপর এসে বাসায় ঢুকে গেট খুলছে না । কিছু বলছেও না। স্থানীয়রা জানান, উত্তর দেয়ানার বাসিন্দা শেখ হুমায়ুন কবীরের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে বিবাহিত। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে দেয়ানার বাড়িতে থাকতেন তিনি। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বিপুল সম্পদের আয় থেকে সংসার চলত তার।
গত ৫ জুলাই মারা যান দৌলতপুর এলাকার ব্যবসায়ী শেখ হুমায়ুন কবীর। আগের রাতে ভাত খেয়ে ঘুমাতে যান, ৫ জুলাই সকালে আর ঘুম ভাঙেনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে এলাকার প্রচার করা হয়। হঠাৎ গত ১২ জুলাই রাতে দৌলতপুর থানায় হাজির হন তার ছোট মেয়ে সুমাইয়া বিনতে কবির। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেন, ‘রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে এবং পরে বালিশচাপা দিয়ে বাবাকে হত্যা করেছেন তিনি।’ হুমায়ুনের চাচাতো ভাই মো. মইন জানান, আমার চাচাতো ভাই হুমায়ুন আর আমি একসঙ্গে মাগরিবের নামাজ শেষ করে বাড়িতে ঢুকেছি। এরপর সকালে কান্নাকাটির শব্দে ঘুম ভাঙলে দেখি মইন মারা গেছে। এরপর যেয়ে দেখি তার ডান হাতে দুটি দাগ । জিজ্ঞাসা করলে বলে হয়তো শাপে কামড়েছে। এরপর বলল স্ট্রোকে মারা গেছে। স্ট্রোকে যদি মারা যায় তাহলে দাগ কিসের। শাপে কামড়ালে এক বাড়িতে থেকে রাতেই তো আমার জানার কথা। যাই হোক মৃত্যু নিয়ে যে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান হওয়া উচিত।
খুলনার দৌলতপুর থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সুমাইয়া মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। তিন বছর ধরে তার চিকিৎসা চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে তারা কোনো অভিযোগ করবেন কিনা এখনো জানাননি। আমরা অপেক্ষায় আছি