কাস্টম হাউজ বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময় উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। তবে চলতি সনে আবারও ভোমরা কাস্টম্স সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে কাস্টম্স হাউজ বাস্তবায়নে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সময়ের একই দাবীতে সংহতি জানিয়েছে বন্দরের আরও ৭টি সংগঠন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে ভোমরা স্থলবন্দরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৯৬ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতায় ভোমরা স্থল শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম চালু হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এসআরও নং-১১-আইন/২০০২, ১২ জানুয়ারী ২০০২তারিখে মাধ্যমে শুল্ক স্টেশনকে বন্দর হিসাবে ঘোষণা করেন। ভোমরা স্থলবন্দরের বিপরীতে ভারতীয় অংশে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চব্বিশ পরগণা জেলার গোজাডাঙ্গা সীমান্ত অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার চেকপয়েন্ট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। কোলকাতা হতে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিঃমিঃ। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকা থেকে যে কোন বন্দরের তুলনায় নিকটতম ভোমরা স্থলবন্দর। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০হাজার মানুষ ভোমরা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। কাস্টম হাউজ প্রতিষ্ঠা হলে তা বেড়ে দাড়াবে কমপক্ষে ৫০হাজার। বর্তমানে ৭৭টি পন্য আমদানির অনুমতি থাকলেও আদতে ২২টির বেশি পন্য এ বন্দর দিয়ে আমদানি হয়না। তবে কাস্টমস্ হাউজ বাস্তবায়ন হলে উচ্চ করের বা সকল ধরনের পন্য আমদানিতে কোন বাধা থাকবেনা। তবে এ নিয়ে সিএন্ডএফ এজেন্টস্ ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায় কাস্টমস্ হাউজ বাস্তবায়িত হলে বৈষম্য কমবে। বাড়বে আমদানি ও রপ্তানি।
ভোমরা স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট মো. শাহানুর ইসলাম শাহিন জানান, ‘কাস্টমস্ হাউজ প্রতিষ্ঠা হলে আমরা সকল ধরনের পন্য আমদানির সুবিধা পাব। এছাড়ও ভোমরা স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের শেড না থাকা ও কিপিং লাইসেন্স নাই। কিন্তু কাস্টমস্ হাউজ বাস্তবায়ন হলে এগুলো চলে আসবে। আমরা একজন কমিশনার পাব। আমাদের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমের জন্য খুলনায় যেতে হবে না
ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি(৮৬) এর সভাপতি ফিরোজ হোসেন জানান, ‘কাস্টমস্ হাউজটি আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। ভোগলিক দিক থেকে কলকাতা থেকে আমাদের বন্দরটি সবথেকে কাছে হওয়ায় ভোমরা বন্দর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পদ্মাসেতু হওয়ার পর দেশের যে কোন বন্দর থেকে দ্রুততম সময়ে রাজধানীতে পণ্য পরিবহন শুধুমাত্র ভোমরা স্থল বন্দর দিয়েই সম্ভব। যে কোন পন্য আমদানির-রপ্তানির সামান্য জটিলতাতেই খুলনায় অবস্থিত কাস্টমসের কমিশনার কার্যালয়ে যেতে হয়। সেখান থেকে ঢাকায় যোগাযোগ করার পরই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এই সময়ের মধ্যে পঁচনশীল পন্য ক্ষতিগ্রস্থহয়। এসব জটিলতা থাকার কারণেই মূলত এ বন্দরে রাজস্ব আদায় কমে যাচ্ছে। তবে কাস্টমস্ হাউজ বাস্তবায়ন হলে এসকল জটিলতার অবসান হবে। প্রাণ ফিরে পাবে ভোমরা স্থল বন্দর। ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এ্যসোসিয়েশনের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত), ‘সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং ভোমরা কাস্টমস্ হাউজ বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক শেখ এজাজা আহমেদ স্বপন বলেন, ভোমরা একটি সম্ভাবনাময় বন্দর। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে ঢাকার সব থেকে নিকটতম বন্দর ভোমরা স্থলবন্দর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের রোডম্যাপের একটি অংশ ভোমরা স্থল বন্দর। সাতক্ষীরার ২২ লক্ষ মানুষের প্রাণের দাবী দ্রæত কাস্টম হাউজ চালু করা হোক।
©খুলনার সময় ২০২৩ | এই ওয়েবসাইটের সকল লেখা, ছবি, ভিডিও সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত