গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ে ঢাকা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের রেজাউল ইসলামের সন্ধানের দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রী নাছিমা খাতুন। রোববার (১৭ নভেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী রেজাউল ইসলাম একজন গরিব অসহায় এবং নিরিহ প্রকৃতির মানুষ। তিনি পেশায় একজন দীনমজুর। এলাকায় থেকে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গত কয়েক বছর আগে ঢাকায় গিয়ে তিনি রিক্সা চালানো শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকাতে রিক্সা চালিয়েই আমাদের সংসার পরিচালনা করেন। কৃষ্ণনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। কিন্তু স্থানীয় দলাদলির কারণে পরিকল্পিতভাবে মোশরাফ হত্যা মামলায় আমার স্বামী রেজাউল ইসলামকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে আমার স্বামী ওই পরিকল্পিত হত্যা মামলায় আদালত থেকে জামিন গ্রহণ করেন এবং ধায্য দিনে আদালতে হাজিরা দেন। ওই মামলা ছাড়া আমার স্বামীর নামে আর কোন মামলা নেই।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামীর একার উপার্জনেই দুই সন্তানসহ আমাদের ৪ জনের সংসার চলে। সহায় সম্পত্তি না থাকায় বাধ্য হয়ে তিনি ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঢাকার সাভারে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কয়েকজন একসাথে থাকেন। আমার জানামতে তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন না। কিন্তু ১৬ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরার ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি ঢাকার সাভারের বাসায় গিয়ে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। সাথে সাথে সাভার থানায় যোগাযোগ করলে সেখান থেকে আমাদের সাতক্ষীরায় খবর নিতে বলেন। আবার সাতক্ষীরা থানা ও ডিবি পুলিশের কাছে খোঁজ নিতে গেলেও তারা আমার স্বামীর আটকের বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানান। এরপর সাতক্ষীরা কারাগারেও খোজ নিয়েছি সেখানেও নেই। আটকের ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এখনো তার কোন সন্ধান পাইনি। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নতুন কোন মামলাও নেই। আর যদি থাকেও তাহলে আইনগত ভাবে আটক করে তাকে কারাগারে পাঠাবেন। কিন্তু ২৪ ঘন্টায়ও তার কোন সন্ধান কেন আমরা পাবো না। স্বামীর সন্ধান না পাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে আমি চরম উদ্বিগ্নতার মধ্যে দিনাতিপাত করছি।
তিনি দ্রুত তার স্বামী রেজাউল ইসলামের সন্ধানের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
©খুলনার সময় ২০২৩ | এই ওয়েবসাইটের সকল লেখা, ছবি, ভিডিও সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত