সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে কী ঘটেছিল?

লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে মাঝ আকাশেই ভয়ানক ঝাঁকুনির কবলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। এ ঘটনায় বিমানের ভেতরে থাকা একজন যাত্রী নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় পড়ে বিমানটি ব্যাংককে জরুরি অবতরণ করে। আজ মঙ্গলবার (২১ মে) এ ঘটনা ঘটে। এরপর বিমানটিতে ঠিক কী ঘটেছিল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। জানা গেছে, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমানটি বিকাল ৩ট ৪৫ মিনিটে ব্যাংককের সুবর্ণাভূমি বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে। লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়া এ বিমান মাঝ আকাশেই ভয়াবহ ঝাঁকুনির কবলে পড়ে। বিমানটিতে ঠিক কী ঘটেছিল তা জানতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটের এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তিনি আকস্মিক ঝোড়োগতির বাতাসের সময় বিমানের ভেতরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।

জরুরি অবতরণের পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বোয়িং 777-300ER বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। বিমানটিতে মোট ২১১ জন যাত্রী ও ১৮ জন ক্রু ছিলেন। দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। ফ্লাইট রাডারের তথ্য অনুসারে, প্রায় ১১ ঘণ্টা উড্ডয়নের পর বিমানটি আন্দামান সাগর পেরিয়ে থাইল্যান্ডের কাছাকাছি অবস্থান করছিল। এসময় বিমানটি হঠাৎ ৩৭ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ৩১ হাজার ফুট উচ্চতায় নেমে আসে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বিমানটির একজন যাত্রী জাফরান আজমির বলেন, হঠাৎ বিমানটি কাত হতে শুরু করে এবং ভয়ানকভাবে কাঁপতে থাকে। তিনি আরও বলেন, বিমানটি হঠাৎ খুব নাটকীয়ভাবে নিচের দিকে নামতে শুরু করে, তখন মনে হচ্ছিল বিমানটি শূন্য থেকে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং যাদের সিটবেল পরা ছিল না তারা সিট থেকে শূন্যে উঠে যাচ্ছিল। ওই যাত্রী আরও বলেন, কিছু লোক শূন্যের দিকে উঠে যায় এবং উপরের লাগেজ রাখার কেবিনের সঙ্গে তাদের মাথা বাড়ি খায়। কেউ কেউ উপরের লাইট এবং মাস্কের জায়গায়ও ধাক্কা খান। কেবিনের লাইট এবং মাস্ক রাখার স্থানে আঘাত লাগায় সব কিছু ভেঙে যায়।

থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন পুলিশ বলেছে, মেডিকেল কর্মীরা ফ্লাইটের আহত যাত্রীদের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে বিমানে উঠেছেন। তবে কতজন আহত হয়েছেন সেই সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেননি। আহত যাত্রীদের উদ্ধারের পর ব্যাংককের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স বলেছে, বিমানে থাকা সব যাত্রী ও ক্রুদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করাই আমাদের মূল অগ্রাধিকার। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য থাইল্যান্ডের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছি এবং অতিরিক্ত সহায়তার জন্য একটি দলকে ব্যাংককে পাঠানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি ব্যাঙ্কক বিমানবন্দরে আপৎকালীন ভিত্তিতে অবতরণের পরই আহতদের চিকিৎসার জন্য সেখানে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে মেডিকেল টিম ছুটে আসে। সংবাদ সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, সুবর্ণাভূমি বিমানবন্দরের সামনে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে আছে। বিমানটি কী কারণে এমন ঝাঁকুনির কবলে পড়ল এখনো পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়। মাঝ আকাশে ঠিক কী ঘটেছিল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানে এধরনের ভয়াবহ ঝাঁকুনি ও মৃত্যুর ঘটনা বিরল।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • সোমবার ,রাত ৩:৫৮
  • ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৮ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ২১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন