অনলাইন ডেস্ক: খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজের ৯৯ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত শেষ করতে চলছে তোড়জোড়। এ কাজ শেষে চলতি অক্টোবরেই এই রেললাইনে ট্রেন ট্রায়াল দেবে। আর এ লাইনের উদ্বোধন হবে আগামী ৯ নভেম্বর। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানে নির্বাচনি জনসভায় ভাষণও দেবেন। এই বিষয়ে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, ৯ নভেম্বর খুলনা-মোংলা রেল লাইনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আগামী নির্বাচন উপলক্ষে খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে নির্বাচনি জনসভায় ভাষণও দেবেন। খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম বলেন, ৯ নভেম্বর এই রেললাইন উদ্বোধন করার ঘোষণা দিয়েছেন মন্ত্রী। প্রকল্পের কাজ এখন শেষের দিকে। ৯৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মোট ৯১ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ৮৮ কিলোমিটার রেলপথ বসানো শেষ। আগামী ১০ দিনের মধ্যেই এ প্রকল্পের শতভাগ কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, দ্রুততার সঙ্গে শতভাগ কাজ সম্পন্ন করে অক্টোবরেই ট্রেন ট্রায়াল দেবে। একাধিক ট্রায়াল হতে পারে। এর আগে ২০২৩ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত সফরে খুলনা সফরে এসেছিলেন। ওই সময় তিনি দিঘলিয়ার নগরঘাট এলাকায় তার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে কেনা পাট গোডাউন পরিদর্শন করেন। এরও আগে প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনায় এসেছেন। সে সময় খুলনার সার্কিট হাউসে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প অনুমোদনের পর নানান জটিলতায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর রূপসা রেলসেতুর পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন ২৫ জুন সপ্তম ও শেষ স্প্যানটি বসে রূপসা রেলসেতুতে।
সেতুর ভায়াডাক্টের ৮৫৬টি পাইল বসানো হয়েছে। মূল সেতুর পাইল ৭২টি, পাইল ক্যাপ ৮টি, বিয়ারিং ৩২টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটির উপরিভাগ তৈরি করা হয়েছে স্টিলের গার্ডার এবং আরসিসি ডেকের সমন্বয়ে। রেলসেতুটি নির্মাণ করে লার্সেন অ্যান্ড টার্বো এবং রেল লাইন নির্মাণের কাজ করে ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। নানান জটিলতায় পাঁচ দফায় মেয়াদ বাড়ে প্রকল্পটির। এখন কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক এক তিন কিলোমিটার রেলসেতুর পুরোটাই দৃশ্যমান। ৯১ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে বসানো হয়েছে ৮৬ কিলোমিটার। ১১টি প্লাটফর্মের নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া শেষ হয়েছে ১০৭টি ছোট ব্রিজ ও ৯টি আন্ডারপাস। শেষ পর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে রেলপথের ফিনিশিং, সিগনালিং ও টেলিকমিউনিকেশনের কাজ চলছে।
এদিকে প্রকল্পের ৯১ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে বসানো হয়েছে ৮৮ কিলোমিটার। খুলনার ফুলতলা থেকে লতার মোড় পর্যন্ত এবং অন্য প্রান্ত মোংলা থেকে মোস্তফার মোড় পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার রেলপথ বসানো সম্পন্ন হয়েছে। ৯১ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে লতার মোড় থেকে মোস্তফার মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রেলপথ বসানো বাকি আছে। ভারতের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় খুলনা-মোংলা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে দেশটির প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টার্বো এবং ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। প্রকল্পে খরচ হচ্ছে চার হাজার ২৬০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে ভারতীয় লোন ২৯৪৮ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন রয়েছে ১৩১২ কোটি টাকা।