খুলনার সময়: মারুফা খাতুনের ঘূর্ণি জাদুতে পাকিস্তানের ব্যাটারদের আটকে রাখে বাংলাদেশ। যে কারণে লক্ষ্যটা নাগালের মধ্যেই পেয়ে যায় টাইগ্রেসরা। পরে বাকি কাজটা ভালোভাবেই সারেন স্বাগতিক দুই ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ও ফারজানা হক। ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ১২৫ রানের রেকর্ড গড়েন তারা। শেষ পর্যন্ত তারা ফিরলেও ২৬ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে জ্যোতিরা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার তিন ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে ২৬ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে বাংলাদেশের মেয়েরা। এরফলে প্রথম কোনো সিরিজ জিতেছিলো টাইগ্রেসরা। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন ফারজানা। ১১৩ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৬২ রান করেন তিনি। ১০৬ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫৪ রান করেন মুর্শিদা। এছাড়া সোবহানা ১৯ ও নিগার ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
এই জয়ে আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে টপকে সাত নম্বরে উঠেছে বাংলাদেশ। ১২ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ১১। ছয় ম্যাচে সমান ১১ পয়েন্ট অস্ট্রেলিয়ারও। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ১০। ৯ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ভারত। শুক্রবার টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিল পাকিস্তান। দুই ওপেনার সাদাফ শামস ও সিদ্রা আমিন গড়েন ৬৫ রানের জুটি। শামসকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে এ জুটি ভাঙেন নাহিদা আক্তার। এরপর মুনিবা আলীকে নিয়ে ২৮ রানের জুটি গড়েন আমিন।
মুনিবাকে ফিরিয়ে এ জুটি ভেঙে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ঘূর্ণির মায়াজাল বিছিয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিতে থাকে দলটি। ৭৩ রান তুলতেই শেষ ৯টি উইকেট হারায় পাকিস্তান। সিদ্রা আমিন এক প্রান্ত ধরে রাখলেও অপর প্রান্তে ব্যাটারদের আসা যাওয়ায় ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। তবে এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন সিদ্রা। ১৪৩ বলে ৮৪ রান তুলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। কিন্তু সঙ্গীদের কেউই তেমন তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রানের ইনিংস খেলেন শামস। এ দুই ব্যাটার ছাড়া কেবল মুনিবা (১৪) ও ডায়না বাইগ (১১) দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেন।
বাংলাদেশের পক্ষে ১০ ওভার বল করে ২৬ রান খরচ করে ৩টি উইকেট নেন নাহিদা। ৩৫ রানের বিনিময়ে ২টি শিকার রাবেয়া খানের। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুক্রবার দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশের মেয়েরা। ফারজানা হক ও মুর্শিদা খাতুনের ওপেনিং জুটিতেই আসে রেকর্ড ১২৫ রান। যা মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি। এর আগে ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শুকতারা রহমান ও শামিমা আক্তার ১১৩ রানের জুটি গড়েছিলেন। আর এ জুটিতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর অবশ্য তিন রানের ব্যবধানে এ দুই সেট ব্যাটার সহ ফাহিমা খাতুনকেও হারায় বাংলাদেশ। তাতে কিছুটা ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। যদিও টাইগ্রেসদের পথ হারাতে দেননি সোবহানা মোস্তারিক ও নিগার সুলতারা। তারা চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৩৯ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন।
পাকিস্তানের হয়ে ২৭ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন সান্ধু।