স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দেশের কোথাও যেন হয়রানির শিকার না হয়। তাদের ওপর যেন হামলা নির্যাতনের ঘটনা না ঘটে এবং দলীয় প্রার্থীরা যেন তাদের কর্মীদের ওপর হয়রানি না করে, প্রশাসন যেন পক্ষপাতহীন ভাবে কাজ করে—এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলা ইনসাইডারের কাছে স্বীকার করেছেন, প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসন যেন কোন প্রার্থীর পক্ষে অতি উৎসাহী না হয়, কাউকে জেতানোর দায়িত্ব না নেয় সে ব্যাপারে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যদি প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো প্রার্থীর পক্ষে অযাচিতভাবে কাজ করে বা কোন প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার জন্য বা হারিয়ে দেওয়ার জন্য ভূমিকা রাখে, নিরপেক্ষতা নষ্ট করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী চান আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক। নির্বাচনে কোন যেন অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে বা কোন পক্ষপাতের অভিযোগ না আসে সে ব্যাপারে তিনি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। একই ভাবে পুলিশ প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করে অযথা যেন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হয়রানি না করা হয়, তাদের কর্মী সমর্থকদেরকে সমাবেশ করতে বাধা প্রদান না করা হয় এসব বিষয় সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন নির্মোহ এবং নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করে তা নিশ্চিত করার জন্য আইজিপিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট ভাবে চাইছেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই জিতুক। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নির্বাচনে যেন কোন পক্ষপাতের অভিযোগ না আসে বা কোন ধরনের প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পুরো দেশের নির্বাচন কার্যক্রমকে মনিটরিং করছেন।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এটা প্রশাসনিক কার্যক্রম। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার একটি নির্বাচনকালীন সরকার। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান কাজ হল নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা। এ কারণেই নির্বাহী প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এদিকে নির্বাচন কমিশনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত পক্ষপাতহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, নির্বাচন কমিশন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সুরক্ষার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে প্রার্থীদের কাছে জেলা রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মকর্তারা একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তা হল কোথাও যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানির অভিযোগ আসে বা প্রতিপক্ষরা যদি তাদের স্বাভাবিক প্রচারণা বিঘ্ন সৃষ্টি করে তাহলে সেক্ষেত্রে তারা যেন তাৎক্ষণিক ভাবে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করে। নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।