কী হচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে?

আবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে দুই বছর আগে যে রকম কাদা ছোড়াছুড়ির ঘটনা হয়েছিল, তা চলচ্চিত্র পরিবারের কাছে যেমন অজনা নয়, তেমনি সিনেমাপ্রেমীরাও ভুলে যাননি নিশ্চয়ই। সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে গত নির্বাচনের মতো এবারও একই রকম ঘটনা ঘটছে কাজহীন, গুরুত্বহীন এই সমিতিকে ঘিরে। শিল্পীদের স্টাডিরুম হিসেবে পরিচিত পাওয়া এ সমিতির মূলত কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই; কিন্তু তারপরও গত কয়েক বছর ধরে এ সংগঠন নিয়ে যেসব ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটছে, তাতে খাদের কিনারায় থাকা চলচ্চিত্র শিল্পকে নিয়ে আরেক দফা ছি.ছি. পড়ে গেছে চিত্রপুরীতে।

কিছুদিন আগে অনেকটা আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। এবার সভাপতি পদে মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল নির্বাচিত হন। সবার আগে নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তারই ফুলের শুভেচ্ছা জানান। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েও তার কাছাকাছি ভোট পাওয়ায় মিডিয়ার কাছে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন গতবারের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার। নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানও সম্পন্ন হয়ে গেছে অনেকদিন আগেই। অথচ বর্তমানে উল্টো পথে হাঁটছেন নিপুণ আক্তার। তার দাবি, শিল্পী সমিতির নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। নতুন কমিটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন নিপুণ আক্তার। নিপুণের রিটের প্রেক্ষিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদটিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। ফলে আপাতত ডিপজল এ পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির ঘটনা তদন্তের জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের আদেশের পর বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে মনোয়ার হোসেন ডিপজল বলেন, ‘আমি বরাবরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। হাইকোর্ট যেহেতু রায় দিয়েছেন এখানে কিছু বলার নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাদের কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে দু-একদিনের মধ্যে আমরা চেম্বার জজ আদালতে যাব।’ এর আগে গত ১৫ মে নিপুণের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় শিল্পী একটি রিট আবেদন করেন। রিটে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। শুধু তাই নয়, সমিতির নতুন সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে ‘মূর্খ’ বলে মন্তব্য করেছেন। নিপুণের এ আচরণকে বাড়াবাড়ি বলে মন্তব্য করছেন চলচ্চিত্র পরিবারের সিনিয়র অভিনয়শিল্পীরা। এ বিষয়ে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা বলেন, ‘নিপুণ যা করছে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এটা নিয়ে তিনি সবার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। সবাই মিলে একটা সুরাহা করা যেত।’ শুধু সোহেল রানাই নয়, চলচ্চিত্রপাড়ার অনেকেই শিল্পী সমিতি নিয়ে সৃষ্ট চলমান ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • রবিবার ,রাত ১১:১৩
  • ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ২০ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন