কোটা আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপান্তর করতে চায় বিএনপি

কোটা আন্দোলন নিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হচ্ছে। প্রথমদিকে কোটা আন্দোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো একটি দূরত্ব বজায় রেখেছিল। কিন্তু এখন বিএনপির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, কোটা আন্দোলনের সঙ্গে তারা যুক্ত হবে। ফলে কোটা আন্দোলনে রাজনীতিকরণ ঘটল।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরু থেকেই কোটা আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত যুক্ত ছিল এবং তারা এই আন্দোলনটাকে একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এখন কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি ভাবে যুক্ত হতে যাচ্ছে তারা। কোটা আন্দোলনকারীরা যেন কঠোর কর্মসূচি দেয় সেজন্য বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ছাত্রদল এবং জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ছাত্রশিবিরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি-জামায়াত এবং নির্বাচন বর্জনকারী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো একযোগে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে যুক্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা বলছেন যে, কোটা আন্দোলনকে তারা সমর্থন করে এবং এ কারণেই কোটা আন্দোলনের সঙ্গে তারা সম্পূরক এবং সমান্তরাল কর্মসূচি দিতে আগ্রহী। তবে কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে সে সম্পর্কে তারা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।

আজ সন্ধ্যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে। আর এর পরেই বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা কী কর্মসূচি দেবে?

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপি এবং নির্বাচন বর্জনকারী রাজনৈতিক দলগুলো মনে করছে যে, কোটা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হলে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। তবে কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন এই আন্দোলনটিকে রাজনীতির বাইরে রাখার পক্ষপাতী। তারা মনে করছে, যদি এই আন্দোলনের মধ্যেই রাজনৈতিক চেহারা আসে তাহলে আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এর ফলে সরকার অনমনীয় অবস্থা যাবে।

কোটা আন্দোলনের মধ্যে যারা নীতি নির্ধারকের ভূমিকা পালন করছেন, তাদের মধ্যে এখন সুস্পষ্ট বিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একটি বড় অংশ এটিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চেয়েছেন। তারা বলছেন যে, কোটা আন্দোলনের সঙ্গে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই। এটি শিক্ষার্থীদের একটি দাবি। এই আন্দোলনে যদি কোন রাজনৈতিক দল সমর্থন জানায় সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়। তবে রাজনৈতিক দলগুলো কোটা সংস্কারের সঙ্গে সম্পূরক কর্মসূচি দিলে সেটি কোটা আন্দোলনের জন্য ইতিবাচক হবে না বলেই তারা মনে করছেন।

অন্যদিকে এই আন্দোলনের সঙ্গে শিবির ও ছাত্রদলের যারা যুক্ত রয়েছেন তারা মনে করছেন, এটি সরকারকে চাপে ফেলার একটি সুযোগ। কোটা আন্দোলনকারীরা যখন ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে অবস্থান গ্রহণ করছেন, তখন রাজনৈতিক ব্যানারে থাকা ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো রাজপথে নামতে চাইছে। তারা এই কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে ঢাকা শহর অচল করে দেওয়ার এক পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।

শুধু শাহবাগ, ফার্মগেট, আগারগাঁও ভিত্তিক নয়, বরং কোটা আন্দোলনকে পুরো ঢাকা শহরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। তারা গুলশান, বনানীর মতো আভিজাত এলাকাগুলোতে এবং শহরের অন্যান্য স্থানেও যেন অবস্থান নিতে পারে, সেজন্য ছোট ছোট গ্রুপে ছাত্রদলকে ভাগ করতে বলা হয়েছে এবং এই গ্রুপগুলো পরবর্তীতে অবস্থান গ্রহণ করবে।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, কোটা আন্দোলনে যদি শেষ পর্যন্ত রাজনীতিকরণ ঘটে তাহলে সেটিতে সরকারেরই লাভ হবে। কারণ সরকার এতদিন ধরে বলে আসছিল যে কোটা আন্দোলনের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের ভূত ঢুকেছে এবং বিএনপি-জামায়াত যদি সরাসরি কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সহমর্মিতা করে কোন কর্মসূচি দেয় বা রাজপথে অবস্থান নেয়, তাহলে সরকারের বক্তব্যই সত্য বলে প্রমাণিত হবে।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

খুলনার সময়

একটি সৃজনশীল সংবাদপত্র

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার ,দুপুর ২:৫২
  • ১৮ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ১৫ রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন