ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে বিশেষ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় উচ্ছেদ চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

সাতক্ষীরায় ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে নলতায় অবস্থিত এমজেএফ বিশেষ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় উচ্ছেদ করতে পায়তারা চালাচ্ছে একটি কু-চক্রিয় মহল। গত শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি ধ্বংশ না করে এবাদতখানা প্রতিষ্ঠা করতে এবং হুমকি ও অপপ্রচার থেকে রেহায় পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন নলতা এমজেএফ ফাউন্ডেশন ও এমজেএফ বিশেষ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। লিখিত বক্তব্যে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষা সহকারি আবুল হুসাইন বলেন, মানবাধিকার জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এম.জে.এফ বিশেষ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি ২০০৮ সাল থেকে কালিগঞ্জ উপজেলার নলতায় বাড়ি ভিত্তিক প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপশি প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৪ সালের ১০ই আগস্ট নলতা চৌমহনীতে প্রতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। পরবর্তীতে সাবেক ইউএনও গোলাম মাইনউদ্দীন হাসানের সহযোগিতায় ও যুগ্ম- সচিব সুলতান মাহমুদের পরিদর্শন পরবর্তী মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রজ্ঞানের মাধ্যমে বিদ্যালয়টি স্বীকৃতি লাভ করে। পরে ২০১৯ সালে নলতা জিয়ার খালের চরের খাস জমিতে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরীত হয়। সেই থেকে দীর্ঘ ৫ বছর ওই স্থানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। জমিটি বিদ্যালয়ের নামে বন্দোবস্ত প্রদানের লক্ষে কালিগঞ্জ উপজেলার সাবেক ইউএনও রহিমা সুলতানা বুশরা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজহার আলীর সহযোগিতায় স্থানীয় ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শরমীষ্ঠা ছবি সহ তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন। সেই সাথে স্কুলের নামে জমি বরাদ্দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসিল্যান্ড, ইউএনও এর মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেন।

আবুল হুসাইন অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থির অবনতির সুযোগে ৬ আগস্ট সকালে স্থানীয় আ’লীগ নেতা হাবিবুর রহমানের ছেলে যুবলীগ নেতা ডাঃ আবু হাসান এবং তার সহযোগি আল-আমিন ও রুবেল, বাচ্চুর পরিকল্পনায় বহিরাগতরা বিদ্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে প্রায় ৩ লক্ষাধীক টাকার ক্ষতিসাধন করে। পরে বিদ্যালয় সংস্কার করতে গেলে উল্লেখিতরা বাধা দানের পাশাপাশি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিতে থাকে। একপর্যায় ১৪ আগস্ট বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের সহযোগীতা কামনা করেন। পরে সেনা সদস্য ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সংস্কার কাজ শুরু হলে ওই দিন সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা ডা. আবু হাসানের নেতৃত্বে একটি ব্যানার টানিয়ে বিদ্যালয়ের গা ঘেষে পাঞ্জেগানা মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করে। এসময় তারা বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধের লক্ষ্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতি আকৃষ্ট করে বিভিন্ন পত্রিকয় সংবাদ প্রকাশ করায়। যা বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্টের পায়তারার সামিল। বর্তমানে উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ এমএফ’র পরিচালক ও তার পরিবার এবং বিদ্যালয়ের স্টাফদের বিভিন্নভাবে জীবননাশের হুমকি প্রদান করে চলেছে। গত ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় মাঘুরালী গ্রামের হাফিজুল, আবু বকর পরিচালকের বড় ছেলে আবু রায়হানকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তিনি আরো বলেন, আমরা ধর্মভীরু মুসলিম পরিবারের সন্তান, আমি কখনো এ মহল্লার মানুষের আশাহত মসজিদের বিরোধী নই। আমরাও চাই এই মহল্লায় একটা এবাদতখানা প্রতিষ্ঠিত হোক।

কিন্তু সেটি প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয় ধ্বংস করে নয়। তিনি এবিষয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মীর খায়রুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক আরিফুল হক, সাদ্দাম হোসেন, আবুল কাশেম, শরিফা কাতুন, শিক্ষা সহায়ক আবুল হোসেন, উম্মে শাখওয়া শারমিন ও এমজেএফ’র নির্বাহী পরিচালক আজহারুল ইসলাম সহ আরো অনেকে।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

খুলনার সময়

একটি সৃজনশীল সংবাদপত্র

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার ,সকাল ৭:৫৮
  • ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ২৫ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন